প্রকাশিত: ০৮/১২/২০১৭ ১১:৫৭ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৯:৫৯ এএম

শফিক আজাদ, উখিয়া নিউজ ডটকম::

মিয়ানমার সেনা, বিজিপি ও সশস্ত্র রাখাইন উগ্রবাদী জনগোষ্টির হাতে বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে এসে উখিয়া-টেকনাফের ১২ অস্থায়ী রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় সাড়ে ৭লাখের অধিক রোহিঙ্গা। এসব আশ্রিত রোহিঙ্গা নারী,পুরুষ, শিশুরা শীতের শুরুতে ঠান্তা জনিত রোগসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, এইচআইভি রোগে আক্রান্ত হয়ে শতাধিক, মৃত্যু হয়েছে এক জনের। ডিপথেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৬৫জন, তৎমধ্যে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মারা গেছে ৫ রোহিঙ্গা শিশু।

সরজমিন দেখা গেছে, নারী-শিশু ও বয়স্ক রোহিঙ্গারা ছাড়াও ঝুপড়ি ঘরসহ শিবিরের বাইরে থাকা রোহিঙ্গারা প্রচন্ড শীতে কাঁপছে। ফলে নারী-শিশুরা ঠান্ডা জনিত সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে রোহিঙ্গারা। বৃহস্পতিবার সকালে উখিয়ার নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত শিবির ও শিবিরের আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা বস্তিতে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা মিয়ানমারের ফকিরাবাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম(৫০) জানান, সরকারি-বেসরকারি ও বিভিন্ন দাতা সংস্থা কর্তৃক ত্রাণ সামগ্রী পাশাপাশি শীতের কম্বল পাওয়া গেলেও ছোট শিশুদের জন্যে কোন প্রকার বস্ত্র না পাওয়ার কারনে শীতে কাঁপছে শিশুরা। ঝুপড়ি ঘরে উপরে ছাউনি থাকলেও নিচে কাদা মাঠি হতে প্রচন্ড ঠান্ডা উঠে থাকে। এতে অনেক সময় ছোট শিশু ছেলে/মেয়েদের নিয়ে নির্ঘূম রাত কাটাতে হয়।

থাইংখালী তাজনিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এইচ ব্লকের মাঝি আয়াতুল্লাহ জানান, তার ব্লকের ১২০টি ঝুপড়ি ঘর রয়েছে। তারা এখনো পর্যন্ত কোন প্রকার শীতের কাপড় বা কম্বল পায়নি। তিনি আরো বলেন, শীতে ঠান্ডা জনিত কারনে বেশ কিছু শিশু সর্দি,জ¦র,কাশি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।

বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি-ব্লকের মাঝি লালু মিয়া জানান, তার ব্লকের অধিকাংশ শিশু শীতের কারণে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এছাড়াও নানান সংক্রামক রোগও দেখা গেছে রোহিঙ্গাদের মাঝে।

মৌচনি ক্যাম্পে ঝুপড়ি ঘরে আশ্রয় নেওয়া নতুন আসা রোহিঙ্গা নারী তসলিমা আক্তার (৩২) জানান, এক কাপড়ে তাঁরা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন। এখন শীতে কষ্ট পাচ্ছে সন্তানেরা। ঠান্তায় জনিত কারনে শিশু মিনারা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েছে । তিনি আরও বলেন, শিশুদের কান্নাকাটির জন্য এই ঝুপড়ি ঘরে রাতে কারও ঘুম হয় না। রাতে ঝুপড়িঘরের বাঁশের বেড়া দিয়ে যখন ঠান্ডা বাতাস ঢোকে তখন শিশুরা কান্নাকাটি শুরু করে। একটা কম্বল কিংবা গরম কাপড় দিয়ে শিশুদের শীত নিবারণেরও কোনো সুযোগ নেই।

কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন আব্দুস সালাম জানান, এই পর্যন্ত এইচআইভি পজেটিভ শতাধিক রোহিঙ্গা নারী,পুরুষ শিশু সনাক্ত করা হয়েছে। মরিয়ম বেগম নামের এক রোহিঙ্গা নারী মারা গেছে এইডস রোগে। এছাড়াও সংক্রামক ব্যধি ডিপথেরিয়া আক্রান্ত হয়েছে ৬৫জন রোহিঙ্গা। মারা গেছে ৫শিশু। তিনি আরো বলেন, হাঁচি, কাশির মাধ্যমে খুব দ্রুত অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আক্রান্তের গলার পিছন দিকে সরু পর্দা তৈরি হয়। এতে শ্বাসকষ্ট, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, পক্ষাঘাত, এমনকি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। টিকা দানের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ করা যায়। এইডস এবং ডিপথেরিয়া ছাড়াও ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, সর্দি-জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া, চর্মরোগ, ইনফেকশন, রক্ত ঝরা ও চোখের এলার্জিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত দেখা গেছে রোহিঙ্গাদের মাঝে। তবে ডিপথেরিয়া রোগটি বাংলাদেশ থেকে নির্মূল করা হয়েছিল। কিন্তু নতুন করে এ রোগটি রোহিঙ্গাদের মাঝে আবার দেখা দিয়েছে।

পাঠকের মতামত

জামিন নামঞ্জুর,ঘুমধুমের ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে

চট্টগ্রামের একটি রাজনৈতিক হত্যা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ...

বিসিআরসি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড- ২০২৫ এ ভূষিত হলেন পুলিশ সুপার মো: নাইমুল হক পিপিএম

পর্যটন খাতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ নাইমুল হক পিপিএম ময়মনসিংহ ...

সাজেদা বেগমকে গর্জনিয়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব অর্পন

শামীম ইকবাল চৌধুরী,নাইক্ষ্যংছড়ি:: গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ...